Skip to main content

ক্যালকুলেটর ছাড়া যেকোনো সংখ্যার বর্গ নির্ণয়ের পদ্ধতি

আজ আমরা দেখব, কীভাবে ক্যালকুলেটর ছাড়াই দ্রুত যেকোনো স্বাভাবিক সংখ্যার বর্গ নির্ণয় করা যায়। এজন্য আমাদের একদম Basic যেসব বিষয় জানতে হবেঃ

কোন সংখ্যার বর্গ নির্ণয় করার মানে হচ্ছে ওই সংখ্যাকে ওই সংখ্যা দিয়েই গুণ করা।

ক্রমিক সংখ্যা➡ পরপর পূর্ণ সংখ্যা। যেমনঃ 6,7,8,9...∞

স্বাভাবিক সংখ্যা➡ 0 থেকে বড় যেকোনো পূর্ণ সংখ্যা। যেমনঃ 1,2,3,..26,..48...∞

প্রথমে এককের ঘরে শুধুমাত্র 5 থাকা সংখ্যাগুলোর বর্গ নির্ণয় করা যাক। এককের ঘরের 5 বাদ দিলে বাকি যে সংখ্যাটা থাকবে (ধরি x), সেটার পরবর্তী স্বাভাবিক সংখ্যার সাথে x গুণ করে যা আসবে, সেটার সর্ব ডানে 25 (5²) বসিয়ে দিলে (Not addition) যে সংখ্যাটা আসবে, সেটিই আমাদের কাঙ্ক্ষিত বর্গ। 

উফফ, কঠিন কথাবার্তা! Okay, উদাহরণ দিচ্ছি। 

75²=? 

এককের ঘরের 5 বাদ দিলে থাকে 7, তো 7 এর পরবর্তী স্বাভাবিক সংখ্যা 8, এখন 7×8=56, তাহলে 56 এর ডানে 25 বসিয়ে দিলেই যা হয় অর্থাৎ 5625, যেটি 75 এর বর্গ। বিশ্বাস না হলে ক্যালকুলেটর আপনার হাতের কাছেই🙂

কোনো একটা জিনিস হুট করে শেখার চেয়ে সেটা কীভাবে হচ্ছে বা এই ট্রিকসটা কীভাবে কাজ করছে, সেটা জানা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। চলুন দেখে নেয়া যাক...

প্রথমে দুই অংকের সংখ্যার ক্ষেত্রে চিন্তা করি। এককের ঘরের অংক তো 5 fixed, ধরি দশকের ঘরের অংক y, তাহলে সংখ্যাটি হল 10y+5। 10 গুণ হওয়ার কারণ, দশকের ঘরের অংক y ছিল। আমরা তো এটিরই বর্গ নির্ণয় করতে চাই। বীজগাণিতিকভাবে,

(10y+5)²=100y²+2×10y×5+5²

=100y²+100y+25

=100(y²+y)+25

=100 × y × (y+1) + 25 [ভেঙে লিখলাম]

y+1 হল y এর পরবর্তী ক্রমিক স্বাভাবিক সংখ্যা। দেখেন, দশকের অংকের সাথে তার পরবর্তী সংখ্যার গুণ হচ্ছে, তার সাথে আবার 100 গুণ হচ্ছে। এই 100 গুণ হওয়ার ফলে গুণফল যাই আসুক না কেন, তার একক ও দশকের ঘরের অংকে 00 থাকবে। এই গুণফলের সাথে এখন 25 যোগ করতে হবে। একক ও দশকের ঘরে 00 যুক্ত সংখ্যার সাথে 25 যোগ করা যা, সেই দুটি শুণ্যের বদলে 25 লিখে দেওয়াও তা! 

এখানে তো শুধু দুই অংকের সংখ্যার ক্ষেত্রে বললাম। কিন্তু এটি এককের ঘরে 5 যুক্ত যেকোনো সংখ্যার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। গাণিতিকভাবে যদি ব্যাখ্যা করতে চাই, তবে এক্ষেত্রে 5 বাদ দিয়ে বাকি পুরো সংখ্যাটাই এবার y হবে। যেমনঃ

155²=?

5 বাদে থাকে 15, 15×16=240, তাই উত্তর 24025।

এখানে একটি প্রশ্ন থাকে, 15×16 গুণটি মনে মনে করব কীভাবে বা করা বেশ কঠিন না? 

উত্তরঃ মোটেও কঠিন নয়। খুব সহজেই এসব গুণ করা যায়। আসলে দুই অংকের যেকোনো সংখ্যার গুণই সর্বোচ্চ 10 সেকেন্ডের মধ্যে করা যায়। সেসব এখন লিখতে চাচ্ছিনা। গুণ করা নিয়ে পরবর্তীতে বিস্তারিত লিখব।

এবার আসি, এককের ঘরের 5 ব্যতীত বাকি সংখ্যাগুলোর বর্গের ক্ষেত্রে। এককের ঘরে 0 যুক্ত সংখ্যার বর্গ তো সবাই খুব সহজেই পারে, সেটা নিয়ে কিছু বলছি না। এজন্য আমাদের অত্যন্ত ছোট্ট একটি থিওরি জানতে হবে। 

দুটি ক্রমিক স্বাভাবিক সংখ্যার বর্গের অন্তর সংখ্যাদ্বয়ের যোগফলের সমান।

ধরি, একটি সংখ্যা n, তাহলে তার পরবর্তী ক্রমিক সংখ্যা n+1.

এদের বর্গের অন্তর = (n+1)²-n²

=n²+2n+1-n²

=2n+1

=n+(n+1) [2n কে ভেঙে আলাদা করে লিখলাম]

= সংখ্যাদ্বয়ের যোগফল [শুরুতে সংখ্যাটিকে n ধরেছি]

উদাহরণে আসি। ধরি, আমাদের 81 এর বর্গ নির্ণয় করতে হবে। এজন্য আমরা 80 এর বর্গকে ব্যবহার করব। চাইলে 82 এর বর্গকেও ব্যবহার করা যায়, সেটা কেন করছি না চিন্তা করে কমেন্টে জানাও।

80²=6400 [Sooo much easy😉]

80 এর পরবর্তী স্বাভাবিক সংখ্যা 81। তাই 81² ও 80² এর অন্তর হবে 81 ও 80 এর যোগফলের সমান। অর্থাৎ,  

81²-80²=(81+80)

⇒81²=(81+80)+80² [পক্ষান্তর]

ডানপাশের রাশির মান বের করা আহামরি কঠিন কিছু নয়। একইভাবে আমরা 79 এর বর্গ পেয়ে যাব। তখন, 

80²-79²=(80+79)

⇒79²=80²-(80+79) [পক্ষান্তর করে -1 দ্বারা গুণ]

আগেরবারের চেয়ে এবার ডানপাশের রাশির মান বের করা তুলনামূলক কঠিন কিন্তু আহামরি কঠিন নয়। কয়েকবার প্র‍্যাকটিস করলেই আশা করি দক্ষ হয়ে যাবেন।

আরেকটি উদাহরণ দিয়ে শেষ করছি।

ধরা যাক, 74 এর বর্গ চাই। এজন্য 75 এর বর্গ ব্যবহার করব যা বের করতে ক্যালকুলেটরের চেয়েও কম সময় লাগে। এখন, 75²-74²=75+74।

একইভাবে, 76²-75²=76+75।

সম্ভাব্য প্রশ্নঃ এককের ঘরে 0,1,4,5,6,9 যুক্ত সংখ্যার বর্গ তো পেলাম, বাকিগুলোর ক্ষেত্রে কীভাবে পাব?

উত্তরঃ বাকিগুলো এত সহজে পারা যাবে না😰

তবে হ্যাঁ, চাইলে বের করা যাবে, সময় লাগবে। যেমনঃ যদি 72 এর বর্গ বের করতে চাই, তাহলে 71 বা 73 এর বর্গ বের করতে হবে, সেগুলো জানার জন্য আবার যথাক্রমে 70 বা 74 এর বর্গ বের করতে হবে। এভাবে ধাপে ধাপে তখন করতে হবে। মোটকথা, আমরা ঐ উপরের থিওরিটাই ব্যবহার করব।


Comments

Popular posts from this blog

মুক্তপাঠের অনলাইন কোর্স সমুহের কুইজের উত্তর

মুক্তপাঠের অনলাইন কোর্সের সাথে অনেকেই পরিচিত। প্রায় সব কোর্সেই চূড়ান্ত মূল্যায়নে কিছু প্রশ্ন করা যেগুলোতে পাস করাটা বাধ্যতামূলক। যদিও বেশ কয়েকবার চান্স থাকে তবুও অনেক ক্ষেত্রেই ১০০% কোর্স সম্পন্ন করা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। যার ফলশ্রুতিতে এত কষ্ট করেও শেষে সার্টিফিকেট পাওয়া যায় না। এমতাবস্থায় কোর্সের কুইজগুলোর উত্তর জানা থাকলে কোর্স সম্পন্ন করা খুবই সহজ হয়। যারা কোর্স সম্পন্ন করেছেন কিন্তু কুইজে পাস করা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছেন তাদের জন্য আমি সম্ভাব্য কিছু কোর্সের(মুক্তপাঠে অসংখ্য কোর্স বিদ্যমান+প্রতিনিয়ত কোর্স সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে) কুইজগুলোর সঠিক উত্তর আপলোড করলাম। কুইজের  উত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন বিনিয়োগের প্রাথমিক ধারণা কোর্সের চূড়ান্ত কুইজের সম্ভাব্য প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন বি.দ্রঃ শুধুমাত্র তাদের জন্যই যারা কোর্সটি করেছেন কিন্তু কুইজে পাস করতে পারছেন না বা পাস করতে কষ্ট হচ্ছে। কোনো ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে না। আপনি বরং আগে নিজে চেষ্টা করুন, তারপর না পারলে ভিডিও দেখুন। যেকোনো সমস্যায় কমেন্টে জানাতে পারেন....  ফেসবুকে আমি tags: মুক্তপাঠের কুইজের উত্তর...

Mini Militia Old Version Download (3.0.6 & 3.0.47)

২০১৭ সালের দিকে Mini Militia নামের একটি Game ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। তখনকার সময়ানুযায়ী সেটি যথেষ্ট উন্নত ছিল। তবে ধীরে ধীরে সময়ের পরিক্রমায় সেটি আর যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে নি। তাই বর্তমানে PUBG, Free Fire ইত্যাদির ভীড়ে সেটি হারিয়ে গেছে। তবে এখনো অনেকে Mini Militia গেমটি ইন্টারনেটে খুঁজেন। তার সবচেয়ে বড় একটি কারণ হল, এটি খেলার জন্য শক্তিশালী Processor সম্বলিত ফোন লাগে না। খুব সাধারণ এন্ড্রয়েড ফোনেও সাবলীলভাবে খেলা যায়। তাছাড়া, ইন্টারনেট ছাড়াই খেলার কারণেও অনেকে খুঁজেন। এর পাশাপাশি শৈশবের স্মৃতি হিসেবে তো রইলই। আমিও তখন এটি অনেক খেলেছি। বিশেষ করে করোনা ভাইরাসের অবরুদ্ধ সময়ে আমরা (আমি, রাকিব, রিফাত, রবিন, মুর্শিদুল, তুষ্টি) আমাদের লটকনতলায় বসে প্রচুর খেলেছি আর গল্পগুজব করেছি।  বর্তমানে ঐ সময়ের গেমটি (পুরাতন ভার্সন) আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। আমরা বেশ কয়েকজন সেটি খুঁজতে প্রচুর সময় ব্যয় করেছি। এমনকি প্রায় দশ পনেরোটি ভিন্ন ভিন্ন গেম ইন্সটল করেও সেটি আর পাই নি। কাকতালীয়ভাবে আমার মতই কোনো একজনের কাছে সেই সময়ের গেমটি পেলাম। আমার কাছে একটি ছিল। আমি ড্রাইভে আপলোড করে রেখেছিলাম। বুঝতে...

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলামের ব্যাঙ্গাত্বক কথোপকথন

রবীন্দ্রনাথ: "কবি, করিয়াছো ভূল, রাখোনাই দাঁড়ি রাখিয়াছো চুল" । নজরুল:  "অন্তরে বিশ্বাস নেই, মিছে করো প্রভুর আশা, প্রভু কি বাবুই পাখি, তোমার দাঁড়িতে বাঁধিবে বাসা?" বি.দ্র. উপরোক্ত লাইন দুটি কোনো কবিতার অংশবিশেষ নয় । ব্যাখ্যাঃ কাজী নজরুল ইসলাম মুসলমান তাই দাঁড়ি রাখাটা সুন্নত ছিল যদিও তিনি দাঁড়ি রাখেন নি, বরং দাঁড়ি না রেখে চুল রেখেছিলেন, তাই রবীন্দ্রনাথ সেকথাই ব্যাঙ্গ করে বলেছিলেন। আর রবীন্দ্রনাথের দাঁড়িকে বিদ্রোহী কবি বাবুই পাখির বাসার সাথে তুলনা করেছেন। যেহেতু রবীন্দ্রনাথ হিন্দু ছিলেন তাই আল্লাহর প্রতি তাঁর বিশ্বাস নেই, অথচ তিনি প্রভুর আশা করেন। মূলকথা হল, অন্তরের দৃঢ় বিশ্বাসটাই আসল, বাহ্যিকরূপ শুধু বাইরের আবরণ ব্যতীত কিছু নয়। ফেসবুকে আমি