Skip to main content

কবরে জীবন্ত শুয়ে থাকার রহস্য

গতকাল বিকালে আমাদের বাড়ি থেকে অগ্নি কোণ বরাবর অনতিদূরের গাবতলি বাজারে এক দল সার্কাস/জাদু দেখায়। আমি আগে শুনিনি, নাহলে দেখতে যেতাম। আমি মনে করি, জাদু বলতে পৃথিবীতে কিছু নেই। জাদু মানেই বিজ্ঞান বা গণিতের কারসাজি, optical illusion, কিছু ক্ষেত্রে শারীরিক অঙ্গভঙ্গির বিশেষ দক্ষতা। জাদুর প্রতি আমার আগ্রহ নেই কিন্তু জাদুর পেছনের এই বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার প্রতি আমার ভীষণ কৌতূহল।

আজ সকালে সেখানের বিভিন্ন জাদুর কথাবার্তা শুনি। তন্মধ্যে একটি এমন, এক লোক কবর তৈরি করে সেখানে আনুমানিক 45 মিনিট বা তার কিছু বেশি সময় শুয়ে থেকে জীবন্ত বেরিয়ে আসে। আমি এর পেছনের রহস্য বিস্তারিত ব্যাখ্যা করছি...

যে কবরটি খুঁড়া হয়, সেটির দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও গভীরতা যথাক্রমে অন্তত 4.8 ফুট, 1.5 ফুট ও 2 ফুট। তাহলে কবরের আয়তন 4.8×1.5×2 = 14.4 ঘনফুট।

ভিডিও দেখে ও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে কথা বলে এমন মাপ আন্দাজ করেছি এবং আমি সর্বনিম্ন মাপ ধরেই হিসাব দেখাচ্ছি। বাস্তবে কবরের আয়তন এর থেকে কিছু বেশি হবে।

সাধারণ মানুষের গড় আয়তন 4 ঘনফুট ধরা যায়। একটু বেশিই ধরে নেই, কালকের ঐ জাদুকরের আয়তন 4.4 ঘনফুট। তাহলে কবরে ঐ জাদুকর প্রবেশ করার পর, কবরের মধ্যে বায়ু থাকবে 14.4-4.4 = 10 ঘনফুট। বাতাসে মোটামুটি শতকরা 20% অর্থাৎ পাঁচ ভাগের একভাগ অক্সিজেন থাকে। তাহলে কবরে অক্সিজেন থাকবে 10÷5 = 2 ঘনফুট।

গবেষণায় দেখা গেছে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ যদি অল্পস্বল্প কাজ করে, তবে তার 24 ঘন্টায় মোটামুটি 24 ঘনফুট অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। এখন যদি সে একদম চুপচাপ শুয়ে থাকে, তবে 24 ঘন্টায় 12 ঘনফুট অক্সিজেন হলেই যথেষ্ট। সুতরাং, 2 ঘনফুট অক্সিজেন নিয়ে ঐ জাদুকর কবরের মধ্যে 2×2 = 4 ঘন্টা বেঁচে থাকতে পারবে। তবে দুই আড়াই ঘন্টার পর অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাওয়ায় বিচ্ছিরি মাথাব্যথা শুরু হতে পারে।

তাই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, কালকের ঐ জাদুকরের 45+ মিনিট বা 1 ঘন্টা অনায়াসেই কবরের মধ্যে থাকতে কোনোই শারীরিক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় নি।

বদ্ধ চৌবাচ্চায় বা কবরে এভাবে কয়েক ঘন্টা কাটিয়ে পুরষ্কার বা বাহবা নেওয়ার মধ্যে বাহাদুরি কিছু নেই। স্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ে আমাদের জ্ঞানের দস্তুরমতো অভাব রয়েছে বলেই এগুলো দেখলে বা এসবের কথা শুনলে আমরা অবাক হই। আর এই জ্ঞানের অভাবের কারণেই আমরা মুক্ত হাওয়ার দাম বুঝি না।

facebook link for any query or confusion

Comments

Popular posts from this blog

Mini Militia Old Version Download (3.0.6 & 3.0.47)

২০১৭ সালের দিকে Mini Militia নামের একটি Game ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। তখনকার সময়ানুযায়ী সেটি যথেষ্ট উন্নত ছিল। তবে ধীরে ধীরে সময়ের পরিক্রমায় সেটি আর যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে নি। তাই বর্তমানে PUBG, Free Fire ইত্যাদির ভীড়ে সেটি হারিয়ে গেছে। তবে এখনো অনেকে Mini Militia গেমটি ইন্টারনেটে খুঁজেন। তার সবচেয়ে বড় একটি কারণ হল, এটি খেলার জন্য শক্তিশালী Processor সম্বলিত ফোন লাগে না। খুব সাধারণ এন্ড্রয়েড ফোনেও সাবলীলভাবে খেলা যায়। তাছাড়া, ইন্টারনেট ছাড়াই খেলার কারণেও অনেকে খুঁজেন। এর পাশাপাশি শৈশবের স্মৃতি হিসেবে তো রইলই। আমিও তখন এটি অনেক খেলেছি। বিশেষ করে করোনা ভাইরাসের অবরুদ্ধ সময়ে আমরা (আমি, রাকিব, রিফাত, রবিন, মুর্শিদুল, তুষ্টি) আমাদের লটকনতলায় বসে প্রচুর খেলেছি আর গল্পগুজব করেছি।  বর্তমানে ঐ সময়ের গেমটি (পুরাতন ভার্সন) আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। আমরা বেশ কয়েকজন সেটি খুঁজতে প্রচুর সময় ব্যয় করেছি। এমনকি প্রায় দশ পনেরোটি ভিন্ন ভিন্ন গেম ইন্সটল করেও সেটি আর পাই নি। কাকতালীয়ভাবে আমার মতই কোনো একজনের কাছে সেই সময়ের গেমটি পেলাম। আমার কাছে একটি ছিল। আমি ড্রাইভে আপলোড করে রেখেছিলাম। বুঝতে...

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলামের ব্যাঙ্গাত্বক কথোপকথন

রবীন্দ্রনাথ: "কবি, করিয়াছো ভূল, রাখোনাই দাঁড়ি রাখিয়াছো চুল" । নজরুল:  "অন্তরে বিশ্বাস নেই, মিছে করো প্রভুর আশা, প্রভু কি বাবুই পাখি, তোমার দাঁড়িতে বাঁধিবে বাসা?" বি.দ্র. উপরোক্ত লাইন দুটি কোনো কবিতার অংশবিশেষ নয় । ব্যাখ্যাঃ কাজী নজরুল ইসলাম মুসলমান তাই দাঁড়ি রাখাটা সুন্নত ছিল যদিও তিনি দাঁড়ি রাখেন নি, বরং দাঁড়ি না রেখে চুল রেখেছিলেন, তাই রবীন্দ্রনাথ সেকথাই ব্যাঙ্গ করে বলেছিলেন। আর রবীন্দ্রনাথের দাঁড়িকে বিদ্রোহী কবি বাবুই পাখির বাসার সাথে তুলনা করেছেন। যেহেতু রবীন্দ্রনাথ হিন্দু ছিলেন তাই আল্লাহর প্রতি তাঁর বিশ্বাস নেই, অথচ তিনি প্রভুর আশা করেন। মূলকথা হল, অন্তরের দৃঢ় বিশ্বাসটাই আসল, বাহ্যিকরূপ শুধু বাইরের আবরণ ব্যতীত কিছু নয়। ফেসবুকে আমি

বড় বড় পরীক্ষার রেজাল্টের দিন সহজে রেজাল্ট দেখার উপায়

প্রায় যেকোনো বড় পরীক্ষার রেজাল্টের দিনই আমাদের দেশের সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইট ডাউন হয়ে যায়, কারণটা কারো অজানা নয়। ফলে আমার মত শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট দেখতে প্রচুর অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। এর সমাধান সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটের ম্যানেজমেন্ট বিভাগে যারা থাকেন তাদের হাতে। কিন্তু আমি চিন্তাভাবনা করে একটা পদ্ধতি বের করছি যার মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে কিছুটা রেহাই পাওয়া যায়।  বর্তমানে আমরা প্রায় সবাই জানি ip address সম্পর্কে, আমরা যারা মোবাইলের ইন্টারনেট ব্যবহার করি, তাদের ক্ষেত্রে প্রতিবার নেটওয়ার্ক সুইচিং এ এই ip  address change হয়(আমাদের দেশের 4G তে হয় না)।  সেহেতু wifi network এ ip address fixed থাকে, তাই এই পদ্ধতি wifi network এর ক্ষেত্রে কাজে দিবে না। উদাহরণস্বরুপ ব্যাখ্যা করছিঃ আজকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজাল্ট দিল দুপুর 2 টার পরপর। তো তখন প্রচুর ব্যবহারকারীর কারণে প্রায় কেউই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে পারছিল না। তবে আমি মোটামুটি প্রথম কয়েক মিনিটের মধ্যেই প্রবেশ করতে পারি। কিন্তু তারপর যখন আমি অন্য একজনের রেজাল্ট দেখার জন্য ওয়েবসাইটে সাবমিট দিলাম, দেখলাম অনেক সময় গেলেও আমার রেজাল্ট আসছে না।...